ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে উঁচু মঠ

মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রাম। গ্রামের মেঠো পথ ধরে একটু সামনে গেলেই চোখে পড়ে দু’টি মঠ।

মাথা উঁচিয়ে মঠ, চূড়ায় ত্রিশুল। প্রাচীন এই জোড়া মঠ জেলার অন্যতম প্রত্ন নিদর্শন। জোড়া মঠ হিসেবে পরিচিত হলেও আসলে দু’টি মন্দির। বড়টি কালী মন্দির আর ছোটটি শিব মন্দির।

সোনারং গ্রামে এক সময় অনেক ধনাঢ্য ব্যবসায়ীর বসবাস ছিল। তাদেরই একজন বণিক রূপচন্দ্র ১৮৪৩ সালে কালী মন্দির এবং ১৮৮৬ সালে শিব মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কথিত আছে এই মন্দির প্রাঙ্গণেই রূপচন্দ্রের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ইতিহাসও তেমনটাই সাক্ষ্য দেয়।

সুরকি ও চুন দিয়ে নির্মিত অষ্টভুজাকৃতির সোনারং জোড়া মঠ উপমহাদেশের সর্বোচ্চ উঁচু মঠ হিসেবে খ্যাত। এর উচ্চতা ২৪১ ফুট। মঠের গোলাকার গম্বুজের একেবারে শিখরে রয়েছে একটি ত্রিশূল। মন্দিরের প্রত্যেকটি উপাসনালয়ের সাথে রয়েছে একটি করে বারান্দা। গোলাকার গম্বুজগুলোতে নানা কারুকাজ।

অষ্টাদশ শতাব্দীতে নির্মিত প্রাচীন এই জোড়া মঠ দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে আসেন অনেকে। মঠের উপরের অংশের পুরো দেয়ালজুড়ে রয়েছে অসংখ্য খোড়ল। খোড়লগুলোতে টিয়া পাখি ও শালিকের বসবাস। মঠের সামনে বিশাল পুকুর, যা এখন হাজামজা। ধারণা করা হয় মঠ নির্মাণের সময় এই পুকুর খনন করা হয়।

প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর অপূর্ব এই প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন, অবহেলা ও সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের পথে। মঠের অনেক মূল্যবান সম্পদ চুরি হয়ে গেছে। এমনকি শিলালিপিটিও এখন আর নেই।

মঠ সংরক্ষণের দায়িত্ব প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের। তারা একটি সাইন বোর্ডে নির্দেশিকা দিয়েই দায় সেরেছে। মঠ সংরক্ষণের তাগিদ সুধীজনদের।

মানুষের আগ্রহের কমতি নেই সোনারং জোড়া মঠ নিয়ে। সংস্কার ও সংরক্ষণ করা হলে এটি হতে পারে জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান।

সুজন হায়দার জনি, মুন্সীগঞ্জ
গণমাধ্যমকর্মী

Scroll to Top