ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

পাঠাগারের ইতিহাস

গ্রন্থাগার বা প্রকৃত অর্থে “পাঠাগার” হলো বই, পুস্তিকা ও অন্যান্য তথ্য সামগ্রির একটি সংগ্রহশালা, যেখানে পাঠকের প্রবেশাধিকার থাকে এবং পাঠক সেখানে পাঠ, গবেষণা কিংবা তথ্যানুসন্ধান করতে পারেন।[১] বাংলা ‘গ্রন্থাগার’ শব্দটির সন্ধি বিচ্ছেদ করলে গ্রন্থ+আগার এবং ‘পাঠাগার’ শব্দটির সন্ধি বিচ্ছেদ করলে পাঠ+আগার পাওয়া যায়। অর্থাৎ গ্রন্থসজ্জিত পাঠ করার আগার বা স্থান হলো গ্রন্থাগার। গ্রন্থাগারের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তি হলেন গ্রন্থাগারিক

গ্রন্থাগারের ইতিহাসের শুরু ২৬০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে[২], প্রাগৈতিহাসিক থেকে ঐতিহাসিক যুগের সন্ধিক্ষনে।[৩][৪] প্রথম লাইব্রেরিগুলি ছিল লেখার প্রাচীনতম ফর্মের সংরক্ষণাগার- যেমন ২৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের সুমেরে আবিষ্কৃত কিউনিফর্ম লিপিতে মাটির ট্যাবলেট এর সংরক্ষণাগার। নিনেভেতে আশুরবানিপালের লাইব্রেরি থেকে ৩০০০০ টির ও বেশি মাটির ট্যাবলেট আবিষ্কৃত হয়েছে[৫]। আবিষ্কারের মধ্যে ছিল সৃষ্টির ব্যাবিলনীয় মহাকাব্য এনুমা ইলিশ, গিলগামেশের মহাকাব্য,[৬] এনুমা আনু এনলিল , “ওমেন টেক্সট”। জ্যোতির্বিদ্যা/জ্যোতিষ সংক্রান্ত পাঠ্য,দ্বিভাষিক শব্দভাণ্ডার, চিকিৎসা নির্ণয়ের তালিকা ও রয়েছে।[৭]

তক্ষশীলা ও নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে অতীব সমৃদ্ধ গ্রন্থাগারের অস্তিত্ব মিলেছে। তিব্বতি সূত্র অনুসারে, নালন্দার গ্রন্থাগারটির নাম ছিল ‘ধর্মগঞ্জ’ ।তিনটি বহুতলবিশিষ্ট ভবনে এই গ্রন্থাগারটি অবস্থিত ছিল। ভবনগুলির নাম ছিল ‘রত্নসাগর’ , ‘রত্নোদধি’ ও ‘রত্নরঞ্জক’ । রত্নোদধি ছিল নয়টি তলবিশিষ্ট ভবন।[৮][৯] নালন্দা মহাবিহারের গ্রন্থাগারে লক্ষাধিক গ্রন্থ ছিল। [১০] গ্রন্থাগারে ধর্মগ্রন্থের পুথি, ব্যাকরণ, ন্যায়শাস্ত্র, সাহিত্য, জ্যোতিষবিদ্যা, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও ভেষজবিদ্যা-সংক্রান্ত গ্রন্থাবলি ছিল।[১১]

খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীতে গ্রীসে, লিখিত বই দিয়ে তৈরি ব্যক্তিগত লাইব্রেরি আবির্ভূত হয়। ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে ভূমধ্যসাগরীয় কনস্টান্টিনোপল এবং আলেকজান্দ্রিয়ায় বিশ্বের মহান গ্রন্থাগার তৈরি হয় ।[১২]

পৌরাণিক দার্শনিক লাওজি চীনের ইম্পেরিয়াল ঝো রাজবংশের প্রাচীনতম লাইব্রেরিতে বইয়ের রক্ষক ছিলেন।এছাড়াও, ধ্বংসপ্রাপ্ত কিছু প্রাচীন গ্রন্থাগারে পাওয়া ক্যাটালগ লাইব্রেরিয়ানদের উপস্থিতির চিত্র তুলে ধরে।

ফাতিমিদের ( ৯০৯) অনেক বড় লাইব্রেরি ছিল। ঐতিহাসিক ইবনে আবি তাইয়ি তাদের প্রাসাদ গ্রন্থাগারকে বর্ণনা করেছেন, যেটিতে সম্ভবত সেই সময়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাহিত্য সংগ্রহ ছিল।

চতুর্দশ শতাব্দীতে, টিম্বাক্টুর গ্রন্থাগারগুলি প্রতিষ্ঠিত হয়।[১৩]

Scroll to Top