ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

সুপারির খোলে ওয়ানটাইম প্লেট!

সুপারির খোলের সখের খেলনা গাড়ি। আনন্দে মেতে আছে দুরন্ত শৈশব। গ্রামবাংলার চিরন্তন এক দৃশ্য।

ভাবুন তো, কোনো অনুষ্ঠান বা বিয়ে বাড়িতে আপনি যে ওয়ানটাইম প্লেটটিতে খেতে বসেছেন, তা সুপারির খোলের তৈরি। এমনকি, বাটি, গ্লাস, ট্রে পর্যন্ত সুপারির খোলের। অবাক হওয়ার কিছু নেই।

এবার সেই সুপারির খোল দিয়ে ওয়ানটাইম প্লেটসহ গৃহস্থালী নানা পণ্য তৈরি করে রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির এলাকার আকরাম হোসেন উজ্জ্বল।

সব সময়ই কিছু একটা করার চিন্তা মাথায় ঘোরে উজ্জ্বলের । কি করা যায়! নদীবহুল এলাকা পিরোজপুরের অন্যতম কৃষিপণ্য সুপারি।

এলাকার এমন কোনো বাড়ি নেই যেখানে সুপারি গাছ নেই। এমনকি বাড়ির আঙিনা, রাস্তাঘাট, পরিত্যক্ত জমি সব জায়গাতেই সারি সারি সুপারি গাছ। বাগানও রয়েছে অনেক।

যেদিকে তাকাবেন, সুপারী গাছ। এসব গাছের ঝরে পড়া খোলের বেশিরভাগ বাগানেই নষ্ট হয়। বড়জোড় বাড়ির বেড়া, আর জ্বালানি হিসেবেই বেশি ব্যবহার এই খোলের।

সুপারির খোলও যে বিক্রি হতে পারে, কেউ ভাবেইনি। স্বপ্নবাজ আকরাম হোসেন উজ্জ্বলের মাথায় খেলে যায়। কিছু কি করা যায় এই খোল দিয়ে! ওয়ানটাইম প্লেট, বা ওই রকম কিছু কি তৈরি করা যায়?

ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হন। এক বন্ধুর সাথে আলাপ করেন। তিনিও উৎসাহ দেন। শুরু করে দেন কাজ। খুলনা থেকে মেশিনপত্র সংগ্রহ করে প্লেট তৈরির কারখানা চালু করেন।

স্বরূপকাঠি কুড়িয়ানা সড়কের পাশে মাহমুদকাঠি হাসপাতাল। সেখানেই গড়ে তোলেন একটি কারখানা। কারখানার যন্ত্রপাতিসহ সব মিলিয়ে তার খরচ হয় ১৫ লাখ টাকা।

বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি আকরাম হোসেনকে। এখন তার কারখানায় ৮ জন কর্মচারি। কারখানা আরও বাড়ানোর চিন্তা রয়েছে আকরামের।

এলাকার লোকজনও সুপারির খোল জমিয়ে রেখে বিক্রি করছেন। সুপারির খোলের প্লেট-ট্রে পরিবেশবান্ধব। ব্যবহারের পর ফেলে দিলে সহজেই পঁচে যায়।

পরিবেশবান্ধব এধরনের কারখানা তৈরিতে এলাকার বেকার যুবকরা এগিয়ে এলে তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবে।

শুধু তাই নয়, এক সময় প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে মানুষ এই পণ্য ব্যাপকভাবে ব্যবহার করবে এমনটাই মনে করেন এই উদ্যোক্তা।

তরিকুল ইসলাম, টিম রুটস, পিরোজপুর

Scroll to Top