বর্ষার পানিতে টইটম্বুর ফসলের মাঠ, হাওর, বিল বা ঝিলে ফুটে আছে নানা রঙের পদ্ম বা শাপলা ফুল। কোনটা সাদা, কোনটা নীল বা লালচে-বেগুনি।
দিগন্ত বিস্তৃত শাপলা বা পদ্ম ফুলের এই অপরূপ সৌন্দর্য যে কারও চোখ জুড়িয়ে যায়। কী মনোহর সেই দৃশ্য।
শাপলা ও পদ্ম ফুলের কথা মনে হলেই, চোখের সামনে এরকম দৃশ্যই ভেসে ওঠে।
তাই বলে ছাদ বাগানে শাপলা বা পদ্ম ফুল! অবাক কাণ্ড বটে।
এমন অবাক কাণ্ডই ঘটিয়েছেন মেহেরপুরের যুবক সাইফুজ্জামান রিজন। বাড়ির ছাদে শাপলা-পদ্মের রাজ্য। রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন রিজন।
সখের বসে করলেও পরে আর বিষয়টা সখের থাকেনি। এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন। এক মৌসুমেই বেচাবিক্রি হয় অন্তত পাঁচ লাখ টাকার।
বাড়ির ছাদ ও উঠানে পানি আর ডাঙার ফুলের অপূর্ব মিতালি গড়ে তুলেছেন মেহেরপুরের সীমান্তবর্তী শোলমারী গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা রিজন।
শখের বসে করেছিলেন ছাদ বাগান। মাত্র ২৫০ টাকা খরচ করে পদ্ম ফুলের একটি চারা কিনে লাগিয়েছিলেন টবে। সেখান থেকেই শুরু। দুই বছরে তার বাগানে এখন কম করে হলেও পাঁচ লাখ টাকার শাপলা ও পদ্ম ফুলের চারা।
গোলাপ, গাঁদা, বেলির সঙ্গে ছাদের চৌবাচ্চায় ছোট পুকুর বানিয়ে শাপলা ও পদ্ম ফুলের গাছ লাগান। বছর না ঘুরতেই ফুলে ভরে যায় সেই পুকুর। এখন তার পুরো ছাদ যেন ছোটখাটো ফুলের রাজ্য।
বাড়ির ছাদে পদ্ম ও শাপলা ফুল ফুটিয়ে রিজন আলাদা পরিচিতি পেয়েছেন। এলাকার সবাই জেনে গেছে তার ছাদ বাগানের কথা। পরামর্শ নিচ্ছেন অনেকে।
তার ছাদ বাগান ও বাড়ির উঠানে রয়েছে জেলাস টু, প্রিন্সেস টম, সিয়াম পিংক টু, মালিকান, তান্জানাইট, কাওসি কাওরান, বুলস আইসহ ৩০ প্রজাতির শাপলা।
আর থাম্মো, কর্ণ, লাক্সমি, রানি রেড, মৃণালিনী, এল এল স্টার, নিউ স্টার, মাইক্রোমাইন, আবরার, স্নো হোয়াইট, বাসুকিসহ ৫০ প্রজাতির পদ্ম ফুল।
এছাড়াও এডেনিয়াম, কাটামুকুট, রেইনলিলি, বাগান বিলাস, জেড প্লান্ট, কাঠ গোলাপ, বকুল, নিম, বট, পাকুড়সহ শতাধিক প্রজাতির ফুল ও বনসাই গাছ।
রিজনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করবে তারা।