পানির রাজ্যে পানির জন্য হাহাকার। অবাক হওয়ার কিছু নেই, উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার আশাশুনি, শ্যামনগর, খুলনার কয়রা, পাইকগাছার বিভিন্ন গ্রামে পানির জন্য এই হাহাকার খুব সাধারণ চিত্র।
নদ-নদীর পানি লবণাক্ত। ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিক। নিচে নেমে গেছে পানির স্তর।
তাইতো রীতিমত যুদ্ধ করতে হয় এক কলস পানির জন্য।
সাতক্ষীরার চাকলা আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের একটি গ্রাম।
গ্রামের একপাশে কপোতাক্ষ ও অপর পাশে খোলপেটুয়া নদী। বছরজুড়েই পানি থইথই করে। কিন্তু কোথাও নেই খাবার পানি।
গ্রামের রোকেয়া খাতুনের বয়স ৬৩ বছর। এক কলস পানির জন্য তাকে যেতে হয় ২ কিলোমিটার দূরের দীঘলাআইট গ্রামের প্রাইমারী স্কুলের পুকুরে। এ তার প্রতিদিনের লড়াই।
স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলেদের ভাগের সংসারে দুমুঠো খাবার জুটলেও, পানির লড়াই করতে হয় প্রতিদিন।
গদাইপুর গ্রামের সত্তর বছরের হাসিনা বিবিকেও লড়তে হয় পানির জন্য। রোকেয়া খাতুন বা হাসিনা বিবির মতো গ্রামের অন্য নারীরা প্রতিদিন দল বেঁধে বের হোন পানির সন্ধানে।
প্রতাপনগর, গাবুরা, পদ্মপুকুর, খাজরা এবং খুলনার কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের চিত্রও একই। এসব এলাকার বেশিরভাগ টিউবয়েল ও পুকুরের পানি লবনাক্ত হয়ে গেছে।
আইলার পর থেকে এ অবস্থা চললেও শুষ্ক মৌসুমে তা প্রকট আকার ধারণ করে।
জলাবায়ুর পরিবর্তন, আইলা-আম্ফানের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর সংকট আরো বেড়েছে।